রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৩৮ পূর্বাহ্ন
দৈনিকবিডিনিউজ৩৬০ ডেস্ক : কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে দক্ষিণ এশিয়ায় স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ অঞ্চলে দুই লাখ ৩৯ হাজার মা ও শিশুর মৃত্যুর জন্য একে কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। জাতিসংঘের নতুন এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন তথ্য। মহামারির প্রভাবে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ পরিবারগুলোকে যত দ্রুত সম্ভব স্বাস্থ্যসেবার আওতায় নিয়ে আসার তাগিদ দেওয়া হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।
ইউনিসেফের উদ্যোগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা(ডব্লিউএইচও) এবং জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল(ইউএনএফপিএ)-এর সহযোগিতায় প্রতিবেদনটি করা হয়েছে। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘ডিরেক্ট অ্যান্ড ইনডিরেক্ট ইফেক্টস অব কোভিড-নাইনটিন প্যান্ডেমিক অ্যান্ড রেসপন্স ইন সাউথ এশিয়া’। ওই প্রতিবেদনে স্বাস্থ্যসুরক্ষা, স্কুলসহ বিভিন্ন সমাজসেবা কার্যক্রম এবং অর্থনীতি নিয়ে সরকার যেসব কৌশল নিয়েছিল তার প্রভাব খতিয়ে দেখা হয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে এখন পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ৮৬ হাজারেরও বেশি মানুষের। অনেক দেশই কঠোর লকডাউন আরোপ করে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করেছিল। হাসপাতাল, ওষুধ ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান ছাড়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট বন্ধ ছিল।
দক্ষিণ এশিয়ার ছয়টি জনবহুল দেশের (আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, নেপাল, ভারত, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কা) পরিস্থিতির ওপর প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনে। উল্লেখ করা হয়েছে, ‘মহামারিজনিত কারণে বেকারত্ব, দারিদ্র্য এবং খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা বেড়ে যাওয়ায় এসব দেশে স্বাস্থ্যসেবাদান আরও ব্যহত হয়েছে।’
প্রতিবেদনে বলা হয় এ ছয় দেশে পুষ্টি সুবিধা থেকে শুরু করে টিকাদান কার্যক্রমসহ বিভিন্ন সেবা স্থগিত থাকার কারণে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু মৃত্যুর সংখ্যা ২ লাখ ২৮ হাজার বেড়েছে। নেপাল ও বাংলাদেশে মারাত্মক অপুষ্টিতে ভোগা ৮০ শতাংশ শিশু পুষ্টি কার্যক্রম থেকে বঞ্চিত হয়েছে। ভারতে টিকাগ্রহণকারী শিশুর সংখ্যা ৩৫ শতাংশ এবং পাকিস্তানে ৬৫ শতাংশ কমে গেছে।
২০২০ সালে ভারতে শিশু মৃত্যু সবচেয়ে বেশি ছিল। দেশটিতে গত বছর শিশু মৃত্যুর হার ১৫.৪ শতাংশ বেড়েছে। আর বাংলাদেশে শিশুমৃত্যু বেড়েছে ১৩ শতাংশ। মাতৃমৃত্যুর ঘটনা সবচেয়ে বেশি হয়েছে শ্রীলঙ্কায়। ২০২০ সালে দেশটিতে মাতৃমৃত্যুহার বেড়েছে ২১.৫ শতাশ। এর পরপরই রয়েছে পাকিস্তানের অবস্থান। দেশটিতে মাতৃমৃত্যু বেড়েছে ২১.৩ শতাংশ।
প্রতিবেদনে গর্ভবতী নারী, কিশোর-কিশোরী এবং শিশুদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তিতে সর্বাধিক অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। ভ্যাকসিন সরবরাহ ও ব্যবস্থাপনা জোরদার এবং শিশুদের প্রয়োজনীয় ওষুধের জোগান নিশ্চিত করার কথাও বলা হয়েছে।